ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর দিনটি কেটেছে প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে। মাঠের খেলা তো ছিলই, সেই সঙ্গে ছিল এন্তার আনুষ্ঠানিকতা। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ, শুভেচ্ছা গ্রহণ—এসবের মধ্যেই কেটেছে ‘বিদায়’ বলার দিনটি। নিজেকে নিয়ে খুব একটা ভাববার অবকাশ পাননি কুমার সাঙ্গাকারা। বাড়ি ফিরেই ক্লান্ত শরীরটাকে কোনো মতে ফেলে দিয়েছেন বিছানায়। এক ঘুমেই রাত কাবার।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই কেমন একটা অনুভূতি পেয়ে বসল তাঁকে। প্রথমবারের মতো অনুভব করলেন তিনি এখন একজন সাবেক ক্রিকেটার! পনেরো বছরের ক্রিকেট জীবন শেষে অবসরজীবনের প্রথম সকালটি এলো ভালো লাগার সঙ্গে একটু খানি ‘মন কেমন হওয়া’ অনুভূতি নিয়ে। পনেরো বছরের মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে এক তুড়িতেই নতুন জীবন শুরু করা এত সোজা নাকি!
সাঙ্গাকারা নিজেই জানিয়েছেন এই অনুভূতির কথা, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে হলো, “আমি এখন থেকে সাবেক ক্রিকেটার! ”’ সকালে ঘুম ভাঙার পর তাঁর আরও একটি কথা মনে হয়েছে। আগের দিন পি সারাভানামুত্তু স্টেডিয়ামে আবেগঘন বিদায়ী বক্তৃতায় তিনি তাঁর কাছের সব মানুষের নামই উল্লেখ করেছেন, কিন্তু বেমালুম ভুলে গেছেন স্ত্রী ইয়েহালির নাম উল্লেখ করতে। অবসরজীবনের প্রথম সকালটা এই ‘অমার্জনীয় ভুলে’র কথা ভেবেই কেটেছে। ইয়েহালি অবশ্য তাঁর কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনো কৈফিয়ত দাবি করেননি’
স্ত্রীর কথা বক্তৃতায় না বলার কারণে অনুশোচনায় পুড়ছেন সাঙ্গাকারা, ‘আমার ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে বড় নেপথ্য কুশীলব ইয়েহালিই। একজন এশীয় ক্রিকেটারের স্ত্রী হিসেবে সে আমার মাঠের বাইরের জীবনটা সামলেছে অসম্ভব কারিশমা সঙ্গে। যৌক্তিক, অযৌক্তিক সমালোচনাগুলোও অনেক সময় সে সামলে আমায় ভারমুক্ত করেছে। আমার যমজ দুই সন্তানের পুরো টেনশন সে নিয়েছে, সে আমাকে সংসারের কোনো বিষয়েই জড়িয়ে বিব্রত করতে চায়নি। আমি যেন আমার বেশিরভাগ ভাবনা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটকে দিতে পারি, ইয়েহালি এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতাই করেছে। মোটকথা, আমার ক্রিকেট জীবনে একটা সফল আমি হতে পারতাম না, যদি এখানে ইয়েহালির আত্মত্যাগ না থাকত। আমি ওকে সেই কলেজ থেকেই ভালোবাসি। ইয়েহালি ছাড়া আমার জীবন আসলেই অচল।’