যৌন ব্যবসাকে আইনগত স্বীকৃতি দিলে অপরাধ কমে যাবে বলেছেন রাইমা সেন

raima-sen-300x260

ভারতে যৌন ব্যবসার আইনি স্বীকৃতি দরকার বলে মনে করেন অভিনেত্রী রাইমা সেন। তার ধারণা যৌন ব্যবসাকে আইনগত স্বীকৃতি দিলে দেশে অপরাধ, খুন, ধর্ষণ অনেক কমে যাবে। এ অভিনেত্রীর মুক্তি পেতে যাওয়া সাম্প্রতিক ছবি ”বলিউড ডায়েরিজ” নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতের এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে রাইমা তার এ মতামত জানান। বলিউড ডায়েরিজ-এ যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মুনমুন সেনের কন্যা রাইমা সেন। সাহসি চরিত্র বটে। এমন চরিত্রে অভিনয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ অভিনেত্রী খোলামেলা কথা বলেছেন নানা বিষয়ে। সাক্ষাতকারটি কর্ণফুলী নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- এই ছবিতে আপনি সোনাগাছির এক যৌনকর্মীর ভূমিকায়। সোনাগাছির লালবাতির এলাকার জীবন কেমন? আপনি কতটা পরিচিত সেই জীবনের সঙ্গে? স্কুলে পড়াকালীন আমাদের সোশ্যাল ওয়ার্ক করতে হত। তখন ওখানকার বাচ্চাদের পড়াতে গিয়েছি। কলকাতায় বাস করলে কোনও না কোনওভাবে যৌনকর্মীদের দেখতেই হয় চোখের সামনে। তা ছাড়া, আমি ওঁদের উপরে তোলা ছবি দেখেছি, বই পড়েছি। •আপনার অভিনীত চরিত্রটির মতো ওখানকার মেয়েরাও কি যাবতীয় বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বেরিয়ে আসার স্বপ্ন দেখে? যৌনকর্মীর কাজটা তো নেহাত পেশা মাত্র। তাকে অতিক্রম করে স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়? কোনও মেয়েকে কি তার প্রফেশন বলিউড হিরোইন হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতে বাধা দেয়? যৌনকর্মীরাও তাঁদের কাজটাকে আর পাঁচটা কাজের মতোই দেখেন। আমরা যেভাবে ব্যাপারটাকে দেখি, তাঁদের দেখাটা আদৌ সেরকম নয়। তাঁরাও রক্তমাংসের মানবী, স্বপ্ন তাঁদের কাছেও আসে স্বভাবিকভাবেই। সম্ভবত তাঁরাও ভাবেন, বলিউড জয় করার মতো রূপ আর প্রতিভা তাঁদের রয়েছে। • প্রস্টিটিউশন সম্পর্কে আপনার মতামত কী? ভারতে প্রস্টিটিউশন আইনসিদ্ধ হওয়া উচিত বলে কি মনে করেন? আমার মনে হয়, প্রস্টিটিউশন ভারতে আইনসিদ্ধ হওয়া উচিত। তা হলে অপরাধ, খুন, ধর্ষণ কমে আসবে বলে মনে হয়। • ভারতীয় ও অ-ভারতীয় ছবিতে বহু অভিনেত্রীই তো যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। কাকে সব থেকে ভাল লেগেছে? ‘প্রিটি উওম্যান’-এ জুলিয়া রবার্টসকে কি ভোলা যায়! আমার মনে হয়, হলিউড-নায়িকারা এ ধরনের চরিত্রের জন্য বিরাট হোমওয়ার্ক করেন। ছবিতে তার ছাপ স্পষ্ট টের পাওয়া যায়। সে যা-ই হোক, ‘বলিউড ডায়েরিজ’-এ ইমলি বলে যে চরিত্রে আমি অভিনয় করছি, তার পুরোটা জুড়েই সোনাগাছি আর সেক্স-ওয়ার্ক নেই। ওটা ইমলির পেশামাত্র। আসলে এই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে তার বলিউড-জয়ের স্বপ্নটাই এই ছবির মূলে কাজ করছে। • এই ছবিতে যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করলেও এতে আপনি কোনও যৌনদৃশ্য বা চুম্বনদৃশ্যে অ্যাপিয়ার করেননি। এটা কেন? ২০১২-এ একটি ছবিতে চুম্বনদৃশ্যে অভিনয় নিয়ে আপনার প্রয়াত দিদিমা আর বাবা-মা আপত্তি করেছিলেন। সেটাই কি কারণ? ‘বাইশে শ্রাবণ’ আর ‘মির্চ’ ছবি দু’টি ওঁরা দেখেছিলেন। ওতে চুম্বনদৃশ্য ছিল। ওঁরা জিগ্যেস করেন— ‘এমন দৃশ্য করাটা কি জরুরি?’ তাঁদের সময় থেকে এখন— পরিস্থিতি যে আমূল বদলে গেছে, তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। প্রজন্ম-ব্যবধানে বহু কিছুই বদলায়। কিন্তু কী আর করা যায়! ওঁরা আমার প্রিয়জন…। তবে, চিত্রনাট্য যদি দাবি করে, তখন তা করতেই হবে। চিত্রনাট্য চাইলে আবার চুম্বনদৃশ্যে অভিনয় করব।

 

সুত্র- এবেলা