মুস্তাফিজই হবে বাংলাদেশের পরবর্তী সুপারস্টারঃ সাঙ্গাকারা

mustafiz

অভিষেক ওয়ানডে সিরিজে ১৩ উইকেট সহ মাত্র নয় ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন তোলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সম্প্রতি আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলেও জায়গা করে নেন তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরেও ১০ ম্যাচে তুলে নেন ১৪ উইকেট। বিশ্বমঞ্চে আলোড়ন তৈরি করা মুস্তাফিজকে নিজেদের দলে ভেড়াতে ভুল করেনি ঢাকা ডায়নামাইটস। খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়ায় সবার আগে মুস্তাফিজুর রহমানকে দলে নেয় ঢাকা। দল সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিলেও এই বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজ বল হাতে রেখেছেন অনন্য সাক্ষর। তাইতো টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও দলের অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারার মুখে মুস্তাফিজ বন্দনা। লঙ্কান এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানের মতে, মুস্তাফিজই হবেন বাংলাদেশের পরবর্তী সুপার স্টার। দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বললেন সাঙ্গাকারা। মুস্তাফিজের আবির্ভাবে বাংলাদেশ দল আরো শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বললেন, ‘বাংলাদেশ দলে ওর অন্তর্ভুক্তি দলটিকে আরো শক্তিশালী করেছে। সব বিদেশি ক্রিকেটারই বলছে, মুস্তাফিজ দারুণ এক চমক। দু-তিন বছরের মাথায় ও-ই হবে বাংলাদেশের পরবর্তী সুপারস্টার।’ খুব কাছে থেকে মুস্তাফিজের বোলিং দেখেছেন ঢাকা ডাইনামাইটসের অধিনায়ক। মুস্তাফিজকে কি রহস্য বোলার মনে হয় জানতে চাইলে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘রহস্য বোলার বলব না, তবে সে খুবই ভালো বোলার। ওর বলে বৈচিত্র্য অনেক, মানসিক গঠনটাও খুব পরিপক্ব। এ রকম বোলার খুব কমই আসে। শেখার আগ্রহ আছে, প্রতিনিয়তই শিখছে এবং উন্নতিও করছে।’ রহস্য না থাকলেও মুস্তাফিজকে সামলানো বড় কঠিন, ভবিষ্যতে তাকে আরও বৈচিত্র্য বাড়াতে হবে বলে মনে করেন সাবেক লঙ্কান এই অধিনায়ক। বললেন, ‘মুস্তাফিজকে

সামলানো সত্যিই খুব মুশকিল। মুস্তাফিজের বৈচিত্র্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ খানিকটা সময় লাগে। ব্যাটসম্যান যখন ওর বোলিংয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাবে, তখন ভালো করতে গেলে ওকে আরো ভিন্নতা আনতে হবে। এখন যেমন দলের জন্য সে একটা সম্পদ, দু-তিন বছর পর সেটা ধরে রাখতে গেলে ওকে বোলিং বৈচিত্র্য আরো বাড়াতে হবে।’ আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহেরও প্রশংসা করেন সাঙ্গাকারা। তিনি বলেন, ‘হাতুরুসিংহে ভালো করেই জানেন একটা দলের উন্নতির জন্য কী কী করতে হয়। তিনি বুদ্ধিমান কোচ, তার প্লেয়ার ম্যানেজমেন্টও দারুণ। দলে জায়গা পাওয়ার জন্য তার কাছে যোগ্যতাই একমাত্র মাপকাঠি। তিনি আসলে একজন খেলোয়াড়ের ভেতর ভালো করার তাগিদ জাগিয়ে দেওয়ার কাজটি খুব ভালো পারেন।’ এছাড়াও বাংলাদেশ দলের উন্নতি নিয়েও কথা বলেন তিনি। ১৯৯৬ সালের লঙ্কান দলের সাথে তুলনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নতির পথেই আছে। তবে সেসময় আমাদের দলটা ছিল সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওয়ানডে দল। তা ছাড়া ওয়ানডেতে বিশ্বের সেরা কয়েকজন ক্রিকেটারও ছিল আমাদের দলে। উইকেট, টুর্নামেন্টের নিয়ম—সব কিছুই আমাদের পক্ষে ছিল। সেসময় ২২০ রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই করে জেতা যেত। কিন্তু এখন নিয়ম বদলেছে, মানসিকতা বদলেছে। আগে উপমহাদেশের বাইরের ক্রিকেটাররা স্পিন এতটা ভালো খেলত না। আর এখন ওরা দিব্যি সুইপ কিংবা রিভার্স সুইপ মারছে। তাই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা হয়তো একটু কঠিনই হবে, তবে তাদেরও দারুণ সুযোগ আছে।