পৃথিবীতে কিছু ভাড়াটিয়া মানবাধিকার সংগঠন রয়েছেঃ ড.হাছান মাহমুদ

 

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আর ভুল সংবাদ ছাপলে তার কিছু হবে না- এই আইন থাকতে পারে না। তাই ভুল সংবাদ ছাপার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।

দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আর আপনি (মাহফুজ আনাম) একজন রাজনীতিকের চরিত্র হনন করলেন। আমাদের ল্যাংটা করা হলো, তার (মাহফুজ আনাম) কিছু হবে না- এটা হতে পারে না।’

তথ্যমন্ত্রীকে হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করার আহ্বান জানান তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রায়শই বলা হয়। পৃথিবীতে কিছু ভাড়াটিয়া মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে। এইসব মানবাধিকার সংগঠন সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির পর বিবৃতি দেয় না, বেলজিয়ামে গুলি করে মানুষ হত্যার পর বিবৃতি দেয় না। আজ দেখলাম তারা একটা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাকি হুমকির মুখে। এইসব ভাড়াটিয়া মানবাধিকার সংগঠন এখন বিবৃতি দিচ্ছে।’

এ সময় গণতন্ত্রের সূতিকাগার ব্রিটেনের একটি ঘটনার অবতারণা করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিবিসিতে ২০১২ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের দিকে একজন রাজনীতিবিদকে নিয়ে একটি ভুল সংবাদ ছাপানো হয়। ওই ভুল সংবাদ ছাপানোর দায়ে বিবিসি’র তৎকালিন ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগের পর নভেম্বর মাসের ৯ তারিখে বিবিসিতে থেকে নয়, বাইরে এসে একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছিল। সেদিন শুধু তিনি পদত্যাগ করেনি, ওই সংবাদ ছাপানোর পেছনে যারা যুক্ত ছিলেন, তারা সবাই পদত্যাগ করেছিলেন।

আরও একটি পত্রিকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ব্রিটেনের সবচাইতে পুরাতন পত্রিকা ‘নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড’। ১১০ বছরের পুরনো পত্রিকা একটি ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য ওই পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক পদত্যাগ করেছিলেন। এমনকি পুলিশ পর্যন্ত পদত্যাগ করেছিল। শুধু পদত্যাগই করেনি, ১১০ বছর চলার পর সেই পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের সংসদে ডেকে কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ বিবিসি’র সম্পাদকের মতো সাহস দেখিয়ে পদত্যাগ করেননি। এদের মতো লোকের কিছু হবে না- এ ধরনের আইন থাকতে পারে না। তাই সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করতে হবে।