অভিবাসন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করার জন্য নির্দেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আপাতত ২ মাস যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য কোন গ্রিনকার্ড পাবেন না অভিবাসীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
করোনার সংকটকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান রক্ষার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।
নির্দেশটি ২ মাসের জন্য কার্যকর হলেও পরবর্তীতে পরিস্থিতি বুঝে এর সময়সীমা বাড়ানো হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর অস্থায়ীভাবে কাজের জন্য অভিবাসীদের যে ভিসা দেয়, তাতে এ স্থগিতাদেশের কোনো প্রভাব পড়বে না।
এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মার্কিন নাগরিকদের স্ত্রী বা স্বামী ও সন্তান এবং চিকিৎসক, নার্স বা অন্য স্বাস্থ্যকর্মী যারা দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছেন তাদের ক্ষেত্রেও এ আদেশ কার্যকর হবে না।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে সমালোচকরা বলছেন, মহামারির অজুহাতে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প নিজের দীর্ঘকাল পরিকল্পিত অভিবাসন নীতিগুলো প্রয়োগ করতে চাইছেন।
বুধবার (২২ এপ্রিল) ট্রাম্প বলেন, অর্থনীতি ফের সচলের পর সব বেকার মার্কিন নাগরিকদের যেন কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দেয়া হয়, তা এ নির্দেশটি নিশ্চিত করবে।
এ নির্দেশের ফলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া, পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য গ্রিনকার্ড স্পন্সর করার যে চর্চা রয়েছে, যাকে প্রেসিডেন্ট ‘চেইন মাইগ্রেশন’ আখ্যা দিয়েছে, তা বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রেসিডেন্টের এ নির্দেশটি আইনী বাধার সম্মুখীন হতে পারে।
গত সোমবার (২০ এপ্রিল) এক টুইটে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সুযোগ সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ওই দিন তিনি বলেন, অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করতে যাচ্ছেন।
করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের চাকরি রক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে যুক্তি দেন ট্রাম্প।
দেশটিতে প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন করোনাভাইরাসে। সহসা এ সংখ্যা কমারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশঙ্কা কতটুকু সত্য হয়, তাই এখন দেখার বিষয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ২১৭ জন।
তবে আক্রান্তদের মধ্যে ৭ লাখ ১৭ হাজার ৬২৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যাদের শরীরে এখনো করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৩১ জনের সংক্রমণ মৃদু এবং ৫৬ হাজার ৬৭৪ জনের অবস্থা গুরুতর।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। সেখানে ৮ লাখ ৪৯ হাজার ০৯২ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া সেখানে মারা গেছেন ৪৭ হাজার ৬৮১ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৪,০৫০ জন।
আক্রান্তের সংখ্যায় এর পরের দেশগুলো হলো, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক ও ইরান।
নিউজটির পাঠক সংখ্যা : ২৮৯