বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮১০ কোটি টাকা চুরির জের ধরে গভর্নরের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে ড. আতিউর রহমানকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ চরম ক্রান্তিকালে তিনি ভারতে রয়েছেন। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি সরকারের কাছে গোপন করা ও দোষী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করার কারণে তাকে এ পদ থেকে শীঘ্রই সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে চিন্তাভাবনা চলছে। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার পরেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলেও ওই সূত্রটি আভাস দিয়েছে।
এদিকে ভারত থেকে গভর্নর দেশে ফিরলেই ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম। কি কারণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি এবং বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গত দুটি বৈঠকে কেন তোলা হয়নি তারও জবাব দিতে বলা হয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
অপরদিকে গভর্নরের অবৈধ কর্মকা-ণ্ডে অসন্তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়টিতে নানাভাবে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ভীষণ অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।দুপুরে সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে এক বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। মুহিত বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি বিকেলে অথবা সোমবার গণমাধ্যমে বিবৃতি দেব। তবে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করব।
সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে জানতে দফায় দফায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সচিব ড. এম আসলাম আলম।
বৈঠকের পরে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির বিষয়ে সচিব ড. এম আসলাম আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। রিজার্ভের অর্থ সরানোর বিষয়ে জানতে এসেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বোর্ড সভা ও দুটি অডিট কমিটির বৈটকে রিজার্ভের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি উপস্থাপন করেনি। কেন এমনটি করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক হয়েছে।
এম আসলাম আলম প্রথমে বৈঠক করেন ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি বিভাগ, অ্যাকাউন্টস এন্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্ট ও বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। বৈঠকে কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, রিজার্ভ থেকে অর্থ সরানোর বিষয়ে খুটিনাটি তথ্য জানতে এসেছি। সব বিষয় খুলে বলতে হবে। আমি এখান থেকে গিয়ে অর্থমন্ত্রীকে জানাবো। বৈঠক সূত্র শীর্ষ নিউজের প্রতিবেদককে এ তথ্য জানিয়েছে।
সচিব পরে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও কয়েকজন নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি কনসালটেন্ট রাকেশ আস্থানাও উপস্থিত ছিলেন।