বাড়ির গোডাউনে তালা মারার প্রতিবাদ করায় জাতীয় ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়ের বেজ ব্যাট ও ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন বাড়িওয়ালার ছেলে। আহত ওই ছেলের নাম মোতালেব হোসেন বাপ্পী (২৪)। রোববার রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ার গৌরিশংকর আগরওয়ালা সড়কের হাজী আব্দুল হালিমের চারতলা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আহত বাপ্পীর বাবা আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে জানান, দীর্ঘ চার বছর ধরে আমার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়ের বাবা জামিল হোসেন লিচু তার পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বাড়ির নিচতলায় একটি গোডাউন রয়েছে। সেখানে তার দোকানের চাল-ডালসহ কিছু মালামাল রাখা হয়। রোববার সকালে আমার ছেলে বাপ্পী গোডাউন খুলতে গেলে দেখতে পায় নিজেদের তালার পরিবর্তে অন্য একটি তালা মারা রয়েছে। তখন এ বিষয়ে বিজয়ের বাবা জামিল হোসেন লিচুকে জিজ্ঞাসা করলে দুজনের মধ্যে কিছু বাক-বিতণ্ডা বাধে। এরপর এ বিষয়ে জামিল হোসেন লিচু ঢাকায় থাকা তার ছেলে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় এনামুল হক বিজয়কে বাড়িওয়ালার ছেলে তাকে অপমান করেছে মর্মে জানান। রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাড়ি নিয়ে বিজয় ও তার তিন বন্ধু কুষ্টিয়ায় এসে তিন তলায় বাড়িওয়ালাকে ডাকেন। এসময় ঘরে থাকা বাপ্পীর মা রাবেয়া খাতুনসহ পরিবারের লোকজন তাদের ভেতরে আসতে বলেন। বিজয় বাপ্পী কোথায় আছে জানতে চেয়ে দ্রুত সেখান থেকে নেমে শহরের বড় বাজারস্থ বিছমিল্লাহ ট্রেডার্সে বসা বাপ্পীকে রাত ৯টার দিকে বাড়ির কাছে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর বাড়ির নিচ তলায় গেটের ভেতর ঢুকিয়ে বিজয়ের হাতে থাকা বেজ ব্যাট ও তার ভাই সজিবের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করে তাকে আঘাত করতে থাকেন। প্রাণ ভয়ে বাপ্পী দৌড়ে উপরে তিন তলায় নিজ ঘরে প্রবেশ করলে হামলাকারী বিজয় ও তার তিন সহযোগীসহ সাতজন এলোপাথাড়িভাবে আঘাত করে রক্তাত্ব করে ফেলে তাকে। এক পর্যায়ে বাড়ির লোকজনের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে বিজয় ও তার বাবা-মা তাদের ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় বাপ্পীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর সংগ্রহে বাপ্পীদের বাড়িতে গেলে বাপ্পীর মা রাবেয়া খাতুন ও তার ভাবি জাগো নিউজকে জানান, বাপ্পীকে মেরে যাওয়ার সময় বিজয় উচ্চ চিৎকার করে বলে যায়, বোম মেরে বাড়ি উড়িয়ে দেয়া হবে। বর্তমানে ওই পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ বিষয়ে ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয় ও তার বড় ভাই সজিবের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ডা. রাজিব শাহরিয়া জাগো নিউজকে জানান, আহতের গায়ে ও পায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে বলে তিনি জানান। কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার দেবনাথ জাগো নিউজকে জানান, দু`পক্ষ থেকেই অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে একজন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়ের একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে বন্ধুসহ গাড়িযোগে কুষ্টিয়ায় এসে হামলার ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
নিউজটির পাঠক সংখ্যা : ৩২৭